পুটিবিলা ইউনিয়ন
চট্টগ্রামঅঞ্চলের কয়েকটি বিখ্যাত ইউনিয়ননের মধ্যে পুটিবিলাঅন্যতম।পুটিবিলা ইউনিয়নটি ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে চট্টগ্রামের যেমনি স্বীয় পরিচিতি রয়েছে তেমনি চট্টগ্রাম অঞ্চলে পুটিবিলা গ্রামেরও একটি আলাদা পরিচিতি রয়েছে।
পুটিবিলা গ্রাম পাহাড়-সমুদ্রবেষ্টিত নয়নাভিরাম চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদেরস্মৃতি বিজড়িত স্থান পুটিবিলা জোড় পুকুরিয়া ইতিহাসের গৌরবের স্বাক্ষী হয়ে আছে। এখানে ১৯৭১ সালে বাংলার দামাল ছেলেরা মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাটি তৈরি করে। এখান থেকেই বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধারা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বর্বর পাকিস্তানীদের প্রতিহত করত। যুদ্ধাবস্থায় এখানে অনেক বাংলার মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হয়েছিল। পুটিবিলা জোড় পুকুরিয়া গ্রামে এখনো মাটি খনন করলে বিভিন্ন মানুষের কংকাল পাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম অঞ্চল পুটিবিলায় অনেক আওলিয়াগণের পদচারণাপদচারণা লাভ করে গর্ব অনুভব করে ।ঐতিহাসিক তাতীদের কাপড় এর সুনিপুন কারিগরি দক্ষতা ও রয়েছে উক্ত গ্রামের বাসিন্দাদের সুনাম।
শিক্ষিতগণেরপাশাপাশি এ গ্রাম তার মাটির বুকে ধারণ করে রেখেছে বেশ কয়েকজন মহান আল্লাহরওলিকে ।“৭ম শতাব্দীতে হযরত উমর(রা.)এর খেলাফতকাল থেকে শুরু করে যে সকলসাহাবা,তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীন ও আউলিয়ায়ে কেরামের দল বা উপদল অমুসলিম দেশচট্টগ্রামে আগমন করেছিলেন তাদের দ্বীন প্রচারের কেন্দ্রটি নগরীতে সীমাবদ্ধনা থেকে গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক গবেষকদের উদঘাটিততথ্যাবলীতে অনেক আউলিয়ার মাজারের নামের সন্ধান পাওয়া যায়।জনশ্রুতি ওপ্রাপ্ত দলিলাদির পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে যে, উল্লিখিত আউলিয়া ওমুবাল্লেগিনের একটি দল চট্টগ্রাম জেলার সর্বদক্ষিণাংশে পুটিবিলা ইউনিয়নের হাজির পাড়া গ্রামে হাজী সাহেব ও গৌড়স্থানের হামজার বর পাহাড়ের ওলী দরবেশগণ লাল মাটির ছোট ছোট অনুচ্চ টিলা-পাহাড়ে বা এর পাদদেশে বসতি স্থাপনকরেছিলেন ।
তারা আধ্যাত্মিকভাবে নির্দেশিত হয়ে পূন্যভূমি পুটিবিলারটিলাপাহাড়ের রুপ,এর মাটির লালিত্য এ স্থানকেতাঁদের ইবাদত,জিয়ারত, মুরাকাবা, মুশাহাদা,দ্বীন প্রচার ও কায়েমেরকেন্দ্ররুপে নির্বাচিত করেছিলেন।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে পুটিবিলাগ্রাম প্রসিদ্ধহওয়ার পেছনে যে কারণগুলো রয়েছে তার মধ্যেজনশ্রুতিতে প্রতীয়মান হয় প্রাকৃতিক অপারঅপরুপতাই বিভিন্ন নদী, খাল ও বিলে পুটি মাছ বেশী পাওয়া যায় বিধায় এর নাম পুটিবিলা নামে প্রচলন হয়।
যে কারণে জেলা শহর থেকে দূরের একটি গঞ্জ-গ্রাম প্রতিকূলঅবস্থার মধ্যেও শিক্ষার আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিল।মুসলিম শাসন আমলে পুটিবিলা অধিবাসীরা শাসক শ্রেণীর শিক্ষা (আরবী-ফার্সি) গ্রহণ করে। উল্লেখ্য,১৮৭৪ সালপর্যন্ত এদেশে সরকারি ভাষা হিসেবে ফার্সি ভাষা চালু ছিল। অনেক আলেম হিসেবে বিশেষ ব্যুৎপত্তি অর্জনকরেন।১৯৭৪সালে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পূর্ব থেকে পুটিবিলাবেসরকারি পর্যায়েমাদরাসা ছিল।বর্তমানে পুটিবিলা হামেদিয়ামাদরাসা, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানে প্রতিষ্ঠিত পুটিবিলা উচ্চ বিদ্যালয়, মধ্য পুটিবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গৌড়স্থান উচ্চ বিদ্যালয় ,ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমাহার অত্র গ্রামকেঅত্যন্ত সমৃদ্ধ করে তুলেছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস